গত ২৭শে জানুয়ারি বুধবার শিক্ষাগুরু ওয়াহিদুল হকের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে কণ্ঠশীলন আয়োজন করে আলোচনা, আবৃত্তি ও সংগীত অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানটি ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয় বুধবার রাত সাড়ে আটটায়।

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী ও প্রশিক্ষক ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। সংগীত পরিবেশন ও স্মৃতিচারণ করেন সংগীতশিল্পী রানা সিনহা। এছাড়া আলোচনা করেন মীর বরকত, এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গোলাম সারোয়ার।

কণ্ঠশীলনের শুরু থেকেই এর সাথে যুক্ত থাকায় ওয়াহিদুল হককে খুব কাছে দেখে দেখেছেন কণ্ঠশীলন অধ্যক্ষ মীর বরকত। তিনি তাঁর স্মৃতিচারণে “ওয়াহিদ ভাই”-এর সাথে কণ্ঠশীলনের ক্লাসের অভিজ্ঞতা, তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে পাণ্ডিত্য, তাঁর সাথে বেড়ানোর অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ওয়াহিদুল হক সবসময় তরুণদের নিয়ে কাজ করতেন, এবং তাদেরকে ডেকে ডেকে নিয়ে যেতেন বিভিন্ন স্থানে। তিনি সবসময় তাঁর শিষ্যদের সাথে গল্প করতেন, আর সেই গল্পের মাঝে থাকত অনেক শিক্ষার বিষয়। ওয়াহিদুল হকের সেই শিক্ষাকে আজও তরুণদের জন্য অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেন মীর বরকত।

সংগীতশিল্পী রানা সিনহা তাঁর শুদ্ধ রবীন্দ্রসংগীত শিক্ষার দিগন্ত উন্মোচনের জন্য ওয়াহিদুল হককে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি তাঁর গুরুর দেশময় ছুটে বেড়ানোর কথা বলতে গিয়ে বলেন, সমগ্র দেশটাই যেন ছিল ওয়াহিদুল হকের বাড়ি।

সংগীত, আবৃত্তি, সাহিত্য থেকে শুরু করে বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান ইত্যাদি সমস্ত বিষয়ে ওয়াহিদুল হকের অগাধ পাণ্ডিত্যের কথা উল্লেখ করেন আবৃত্তিশিল্পী ও প্রশিক্ষক ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। ওয়াহিদুল হক কীভাবে তাঁর ছোট-বড় শিষ্যদের রবীন্দ্রসংগীত শেখাতেন, নিজ চোখে দেখা সেই অভিজ্ঞতাও তিনি তাঁর স্মৃতিচারণে বর্ণনা করেন। ওয়াহিদুল হক কেবল স্বরলিপি মেনে গানের সুর সঠিক জায়গায় লাগানোর প্রতিই জোর দিতেন না, সেই সাথে গানের বাণীকে হৃদয়ে ধারণ করে তার ভাব গানের মাধ্যমে প্রকাশ করার প্রতিও জোর দিতেন। প্রচারবিমুখ এবং সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত এই মানুষটিকে নিয়ে ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি এমন একজন মানুষ, যিনি তাঁর জীবনে কোনো বিনিময় ছাড়া সবাইকে শুধু দিয়েই গেছেন। আজকের দিনেও তাঁর কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন কণ্ঠশীলন সদস্য আহমাদুল হাসান হাসনু, শফিক সিদ্দিকী এবং শিরিন মিথিলা।